লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় একমাত্র সরকারি স্কুলে ভর্তি সংকট: হতাশায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা
লক্ষীছড়ি প্রতিনিধি।।
নতুন বছরের শুরুতেই লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার একমাত্র সরকারি মডেল স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হতে না পারায় হতাশা আর ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। লক্ষ্মীছড়ি সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে আসন সংকট এবং অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে এই দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব, আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, “এই বছর ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য ১৫০ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করলেও, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমরা মাত্র ৫৫ জনকে ভর্তির সুযোগ দিতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব,জিরুনা ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের সদস্য জনাব,অনিময় চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র স্কুলের ভর্তি কমিটির সভাপতি জনাব, সেটু কুমার বডুয়া, এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বোর্ড সভা হয়েছে। তবে এখনো কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।"
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা গভীর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। তাদের দাবি, বিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক। একজন অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলে এর দায় কে নেবে? আমরা দ্রুত কার্যকর সমাধান চাই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভর্তি কমিটির সভাপতি জনাব, সেটু কুমার বড়ুয়া জানান, “সরকারি বিধি বিধান অনুযায়ী, ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার সুযোগ নেই। ভর্তির ক্ষেত্রে লটারি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। এখানে গরিব বা ধনী বিবেচনা করার সুযোগ নেই। বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও অবকাঠামো সংকট থাকায় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।”
তবে, হতাশার মধ্যেও স্বস্তির কিছু খবর রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, “আগামী বছরের মধ্যে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছেন, যা ভর্তির সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা এই বছর ভর্তি হতে পারেননি, তাদের সাময়িকভাবে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, আর্থিকভাবে অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করে এই সংকট দূর করা সম্ভব। বিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিদ্যালয়ের শারীরিক পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রশাসন ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে। তবে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকবে, যা উপজেলাবাসীর জন্য বড় ধরনের আঘাত হয়ে উঠতে পারে।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রত্যাশা করছেন সকলে। শিক্ষা, সবার মৌলিক অধিকার এই মন্ত্রেই এগিয়ে যেতে হবে।